সাংবাদিকতা যেমন দায়িত্ব, তেমনি এক শ্রেষ্ঠ সাধনা। এই সাধনার পথিক যারা, তাঁদের মধ্যে কিছু মানুষ আছেন—যাঁরা নিজেরা এক প্রতিষ্ঠান, এক বাতিঘর হয়ে ওঠেন। চট্টগ্রামের গর্ব, নির্ভীক ও আপোষহীন সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি ভাই ঠিক তেমন একজন ব্যক্তিত্ব। তাঁর হাতে আমার লেখা গবেষণাধর্মী বই “সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের কথা” তুলে দিতে পারা নিঃসন্দেহে আমার জীবনের এক স্মরণীয় ও গৌরবময় মুহূর্ত।
প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে সাংবাদিকতা করে চলা কচি ভাই কেবল একটি পত্রিকার সম্পাদক নন, তিনি নিজেই এক চলমান ইতিহাস। তাঁর কলম যেমন সাহসী, তেমনি সত্যনিষ্ঠ। তিনি দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার আবাসিক সম্পাদক হিসেবে যেমন দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে, তেমনি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও তিনি রেখেছেন গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। তাঁর ব্যক্তিত্বে রয়েছে নেতৃত্বের দীপ্তি, সততার ঔজ্জ্বল্য, আর সংবাদপত্র ও মুক্ত চিন্তার প্রতি এক অসীম দায়বদ্ধতা।
গতকাল চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের নবগঠিত কমিটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে, নবনির্বাচিত সদস্যদের পক্ষ থেকে কচি ভাইয়ের হাতে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়। এ শুভক্ষণে আমি, একজন সাংবাদিক গবেষক ও টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে, আমার বহুদিনের শ্রম ও অধ্যবসায়ের ফসল, বইটি উপহার দিই কচি ভাইকে।
কচি ভাই বইটি হাতে নিয়ে গভীর মনোযোগ দিয়ে এর শিরোনাম ও বিষয়বস্তু অবলোকন করেন, এবং পরম আন্তরিকতায় আমাকে ধন্যবাদ জানান। তাঁর চোখে যে উজ্জ্বলতা দেখেছি, তা একজন প্রবীণ সাংবাদিকের স্বীকৃতি ও স্নেহের প্রতিফলন। সেই মুহূর্তে মনে হয়েছে, আমার লেখার পথচলায় আজ যেন একটি বড় মাইলফলক স্পর্শ করলাম।
কচি ভাই শুধু একজন সাংবাদিক নন, তিনি আমাদের সাংবাদিক সমাজের পথপ্রদর্শক। তাঁর হাতে বইটি তুলে দিয়ে আমি কেবল একটি গ্রন্থ উপহার দিইনি, বরং তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানাবার এক ক্ষুদ্র প্রয়াস করেছি।
এই দিনটি, এই মুহূর্তটি আমার স্মৃতির ভাণ্ডারে থাকবে চিরদিন, কারণ একজন কিংবদন্তির হাতে নিজের লেখা তুলে দেওয়ার সৌভাগ্য সবাই পায় না।