দীর্ঘ ২৩ বছর পর পটুয়াখালী জেলা বিএনপি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২ জুলাই বুধবার সকাল ১০টায় পটুয়াখালী ব্যয়ামাগার মিলনায়তনে পটুয়াখালী জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক প্রবীণ রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
পটুয়াখালী জেলা শাখার এই ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্সাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রাজীব আহসান সহ কেন্দ্রীয় বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এ সম্মেলন উপলক্ষে পটুয়াখালী জেলা জুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। জেলা বিএনপি’র এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে জেলা বিএনপি’র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ শীর্ষ পদ পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে সেজেছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
এ সম্মেলনে জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির ৩০ জনসহ ৮ টি উপজেলার ১৫১৪ জন কাউন্সিলর ও পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতি পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাঁরা হলেন বর্তমান বিএনপি কমিটির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি ও অন্যতম সদস্য মাকসুদ আহমেদ বায়জীদ (পান্না মিয়া)।
সাধারন সম্পাদক পদে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য পিপি এ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান টোটন, সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন খান নান্নু, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. সাইদুর রহমান তালুকদার, জেলা বিএনপির সদস্য জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি বশির আহম্মেদ মৃধা, জেলা যুবদলের সাবেক সাবেক সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম লিটন ও সাধারন সম্পাদক এ্যাড. তৌফিক আলী খান কবির।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, ৫ ই আগস্ট ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বড় দল বিএনপি এ কথা শুধু বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা নয় বাংলাদেশের সকল জনগন স্বীকার করবে। সংসারের বড় ছেলে হলে অনেক কিছুতে যেমন ছাড় দিতে হয় তেমনি বড় দল হিসেবে বিএনপিকেও অনেক কিছু ছাড় দিতে হবে। দল হিসেবে বিএনপি’র যেমন আদর্শ আছে তেমনি অন্যান্য দলগুলোর নিজস্ব আদর্শ আছে।
আদর্শগত মিল না থাকলেও জাতীয় স্বার্থে আমরা সবাই এক। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। আমাদেরকে জনগণের পাশে যেতে হবে এবং ৩১ দফার বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আপনাদেরকে জনগণের পাশে থাকতে হবে। আপনাদের দ্বারা যেন তাদের কারো কোন ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে আপনি যেমন সতর্ক থাকবেন তেমনি আপনার পাশে যেসকল কর্মী আছে তাদেরকে সতর্ক রাখবেন।
তিনি আরো বলেন, জনগণের সঙ্গে থাকুন- জনগণকেকে সঙ্গে রাখুন, জনগণের সাথে থাকুন- জনগণকে সাথে রাখুন।
দলের সুনাম সবসময় রক্ষা করতে হবে, কোন অবস্থায় দলের ক্ষতি করা যাবেনা।
প্রত্যেককে জনগণের পাশে থাকতে হবে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা করতে হবে। আপনার এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা প্রদান করতে হবে। কোন ক্রমেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবেনা।
বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। দেশের ১২ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ যাদেরকে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিবে তারাই আগামী দিনে এ দেশকে পরিচালনা করবে।
প্রথম অধিবেশন শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে ভোট গ্রহণ হয়। ব্যালটের মাধ্যমে কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন স্নেহাংশু সরকার কুট্টি। তিনি ভোট পেয়েছেন ৭৫৮টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাকসুদ আহমেদ বায়েজিদ পান্না মিয়া পেয়েছেন ৪০২ ভোট। আর ৪৭৪ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বশির আহমেদ মৃধা পেয়েছেন ৪২০ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে ৬ জন প্রার্থীর অন্যদের মধ্যে মনিরুল ইসলাম লিটন ১৬২, অ্যাডভোকেট তৌফিক আলী খান কবির ৮৪, দেলোয়ার হোসেন খান নান্নু ১৩ ও সাইদুর রহমান তালুকদার (সাঈদ তালুকদার) পেয়েছেন ৪ ভোট। নির্বাচনে ১৫১৪ কাউন্সিলরের মধ্যে ১১৭২ জন ভোট প্রদান করেন।
Related
দীর্ঘ ২৩ বছর পর পটুয়াখালী জেলা বিএনপি'র সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে!